আররাহীকুল মাখতূম সফিউর রহমান মোবারকপুরী

আররাহীকুল মাখতূম

সফিউর রহমান মোবারকপুরী

রাসূলের সুন্নাহ হচ্ছে এক জীবন্ত ও সর্বোত্তম আদর্শ। কিয়ামত পর্যন্ত এ আদর্শের আবেদন, এ আদর্শের বর্ণনা এবং এ আদর্শ সম্পর্কে গ্রন্থ রচনা অব্যাহত থাকবে। কারণ, রাসূলের আদর্শের মাঝে রয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতের আলো। আল্লাহর রাসূলের কাজ ও চরিত্রই হচ্ছে তাঁর সীরাত। কুরআনের প্রতিচ্ছবি, সকল মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও পরিপূর্ণ, সমগ্র মাখলুকের ভালোবাসা পাওয়ার উপযুক্ত এমন মহান ব্যক্তিত্বের প্রতি যুগে যুগে মুসলিমরা ভালোবাসার প্রমাণ দিয়ে এসেছে।

তারই ধারাবাহিকতায় হিজরী ১৩৯৬ সনে রাবেতায়ে আ’লামে ইসলামি সীরাতুন্নবী সম্পর্কিত গ্রন্থ রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিশ্বব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশের বহু লেখক আগ্রহসহ অংশগ্রহণ করেন। ১১৮২টি পাণ্ডুলিপির মধ্যে ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ গ্রন্থটিকে প্রথম পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে এক বিরল সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। আর এ দুর্লভ সম্মানের কৃতিত্ব, অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তার সমস্ত প্রশংসা শুধুমাত্র তারই প্রাপ্য যাঁর আদর্শকে কেন্দ্র করে এ গ্রন্থ রচিত হয়েছে।

সাহিত্যকর্মের রূপ-রস, সৌন্দর্য, মাধুর্য, শোভনতা, সাবলীলতা ও প্রাঞ্জলতার মধ্যেই নিহিত রয়েছে উক্ত সাহিত্যকর্মের প্রকৃত মূল্য। ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ গ্রন্থের সুন্দর ও সাবলীল প্রকাশ ভঙ্গি এবং লেখকের মোহনীয় শক্তি জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের অন্তরে। পাঠকের কথা বিবেচনায় রেখে লেখক গ্রন্থ রচনার ক্ষেত্রে গ্রন্থের কলেবর অস্বাভাবিক দীর্ঘ করেননি, আবার খুব বেশি সংক্ষিপ্তও করেননি। অথচ এটি একটি পূর্ণাঙ্গ সীরাত গ্রন্থও বটে।

গ্রন্থ রচনায় লেখক ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহের ধারাবাহিক বর্ণনা করেছেন এবং সেগুলোর বর্ণনায় তিনি বিভিন্ন অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়ে পর্যায়ক্রমিকভাবে বিন্যস্ত করেছেন। যেসব ঘটনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রন্থে মত পার্থক্য রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে লেখক সবকিছু পর্যালোচনা করে যেটি সঠিক মনে করেছেন সেটির উল্লেখ করেছেন। যেসব ক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণকারীদের তথ্য লেখকের কাছে সঠিক মনে হয়নি সেসব ক্ষেত্রে তিনি যুক্তি প্রমাণের ইঙ্গিত প্রদান করেছেন। আবার, তথ্যের উৎস হিসেবে গ্রন্থটিতে লেখক অসংখ্য গ্রন্থের নাম ও পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করেছেন।

গ্রন্থের শুরুতে লেখক রাসূল এর আবির্ভাবের পূর্বে পৃথিবীতে বিরাজমান বিভিন্ন অবস্থা ও পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। আরবের ভৌগোলিক পরিচয়, তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন জাতির অবস্থান, আরবের নেতৃত্ব ও শাসন ব্যবস্থা, আরবদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মতবাদ, জাহেলী সমাজের চারিত্রিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে লেখক এ পৃথিবীতে রাসূল এর আবির্ভাবের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অতঃপর রাসূল এর পবিত্র ও সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবির এক অনবদ্য উপস্থাপনা গ্রন্থটিকে করেছে প্রাণবন্ত।

রাসূল এর দাওয়াতের বিভিন্ন কৌশল ও পর্যায় বর্ণনা হতে শুরু করে, বদর, ওহুদসহ বিভিন্ন যুদ্ধ, মক্কা বিজয়, বিদায় হজ্জ, রাসূল এর ওফাত পর্যন্ত সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনা বর্ণনার পর রাসূল এর পরিবারের পরিচিতি, রাসূল এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও শারীরিক সৌন্দর্য বর্ণনার এক ব্যতিক্রমী উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে লেখক গ্রন্থটির পরিসমাপ্তি টানেন।

এই জীবনীগ্রন্থে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-য়ের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। রিয়াদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দ্য কুরআন পাবলিশিং এন্ড প্রিন্টিং এর তত্ত্বাবধানে এর সম্পাদনা সম্পন্ন হয়। ১৯৯৯ সালে খাদিজা আখতার রেজায়ী বইটির বাংলা অনুবাদ করেন এবং আল কুরআন একাডেমী পাবলিকেশন্স বইটি প্রকাশ করে। বইটি বাংলা ভাষায় অনূদিত হবার পর অত্যন্ত পাঠক জনপ্রিয়তা লাভ করে। মাত্র পঞ্চান্ন দিনের মাথায় বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ সহ এ পর্যন্ত পনের বছরে বইটির একুশটি সংস্করণ বের হয়েছে। পরবর্তীতে তাওহীদ পাবলিকেশন্স বইটির অনুবাদ বের করে। এ প্রকাশনী থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুল খালেক রাহমানী। বইটির নাম রাহিকূল মাখতূম এর অর্থ হল ছিপি আটা বোতল। লেখক এই জীবনীগ্রন্থের নামকরণ করেছেন পবিত্র কুরআনের সূরা মুতাফ্‌ফিফীনের আয়াত ২৫ থেকে । মূল বইটি প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠা হলেও বাংলা অনুবাদে ৫৩০ পৃষ্ঠা হয়েছে। বইটির ইংরেজি অনুবাদের নাম The Sealed Nectar.

আররাহীকুল মাখতূম

সফিউর রহমান মোবারকপুরী

রাসূলের সুন্নাহ হচ্ছে এক জীবন্ত ও সর্বোত্তম আদর্শ। কিয়ামত পর্যন্ত এ আদর্শের আবেদন, এ আদর্শের বর্ণনা এবং এ আদর্শ সম্পর্কে গ্রন্থ রচনা অব্যাহত থাকবে। কারণ, রাসূলের আদর্শের মাঝে রয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতের আলো। আল্লাহর রাসূলের কাজ ও চরিত্রই হচ্ছে তাঁর সীরাত। কুরআনের প্রতিচ্ছবি, সকল মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও পরিপূর্ণ, সমগ্র মাখলুকের ভালোবাসা পাওয়ার উপযুক্ত এমন মহান ব্যক্তিত্বের প্রতি যুগে যুগে মুসলিমরা ভালোবাসার প্রমাণ দিয়ে এসেছে।

তারই ধারাবাহিকতায় হিজরী ১৩৯৬ সনে রাবেতায়ে আ’লামে ইসলামি সীরাতুন্নবী সম্পর্কিত গ্রন্থ রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিশ্বব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশের বহু লেখক আগ্রহসহ অংশগ্রহণ করেন। ১১৮২টি পাণ্ডুলিপির মধ্যে ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ গ্রন্থটিকে প্রথম পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে এক বিরল সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। আর এ দুর্লভ সম্মানের কৃতিত্ব, অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তার সমস্ত প্রশংসা শুধুমাত্র তারই প্রাপ্য যাঁর আদর্শকে কেন্দ্র করে এ গ্রন্থ রচিত হয়েছে।

সাহিত্যকর্মের রূপ-রস, সৌন্দর্য, মাধুর্য, শোভনতা, সাবলীলতা ও প্রাঞ্জলতার মধ্যেই নিহিত রয়েছে উক্ত সাহিত্যকর্মের প্রকৃত মূল্য। ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ গ্রন্থের সুন্দর ও সাবলীল প্রকাশ ভঙ্গি এবং লেখকের মোহনীয় শক্তি জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের অন্তরে। পাঠকের কথা বিবেচনায় রেখে লেখক গ্রন্থ রচনার ক্ষেত্রে গ্রন্থের কলেবর অস্বাভাবিক দীর্ঘ করেননি, আবার খুব বেশি সংক্ষিপ্তও করেননি। অথচ এটি একটি পূর্ণাঙ্গ সীরাত গ্রন্থও বটে।

গ্রন্থ রচনায় লেখক ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহের ধারাবাহিক বর্ণনা করেছেন এবং সেগুলোর বর্ণনায় তিনি বিভিন্ন অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়ে পর্যায়ক্রমিকভাবে বিন্যস্ত করেছেন। যেসব ঘটনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রন্থে মত পার্থক্য রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে লেখক সবকিছু পর্যালোচনা করে যেটি সঠিক মনে করেছেন সেটির উল্লেখ করেছেন। যেসব ক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণকারীদের তথ্য লেখকের কাছে সঠিক মনে হয়নি সেসব ক্ষেত্রে তিনি যুক্তি প্রমাণের ইঙ্গিত প্রদান করেছেন। আবার, তথ্যের উৎস হিসেবে গ্রন্থটিতে লেখক অসংখ্য গ্রন্থের নাম ও পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করেছেন।

গ্রন্থের শুরুতে লেখক রাসূল এর আবির্ভাবের পূর্বে পৃথিবীতে বিরাজমান বিভিন্ন অবস্থা ও পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। আরবের ভৌগোলিক পরিচয়, তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন জাতির অবস্থান, আরবের নেতৃত্ব ও শাসন ব্যবস্থা, আরবদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মতবাদ, জাহেলী সমাজের চারিত্রিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে লেখক এ পৃথিবীতে রাসূল এর আবির্ভাবের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অতঃপর রাসূল এর পবিত্র ও সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবির এক অনবদ্য উপস্থাপনা গ্রন্থটিকে করেছে প্রাণবন্ত।

রাসূল এর দাওয়াতের বিভিন্ন কৌশল ও পর্যায় বর্ণনা হতে শুরু করে, বদর, ওহুদসহ বিভিন্ন যুদ্ধ, মক্কা বিজয়, বিদায় হজ্জ, রাসূল এর ওফাত পর্যন্ত সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনা বর্ণনার পর রাসূল এর পরিবারের পরিচিতি, রাসূল এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও শারীরিক সৌন্দর্য বর্ণনার এক ব্যতিক্রমী উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে লেখক গ্রন্থটির পরিসমাপ্তি টানেন।

এই জীবনীগ্রন্থে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-য়ের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। রিয়াদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দ্য কুরআন পাবলিশিং এন্ড প্রিন্টিং এর তত্ত্বাবধানে এর সম্পাদনা সম্পন্ন হয়। ১৯৯৯ সালে খাদিজা আখতার রেজায়ী বইটির বাংলা অনুবাদ করেন এবং আল কুরআন একাডেমী পাবলিকেশন্স বইটি প্রকাশ করে। বইটি বাংলা ভাষায় অনূদিত হবার পর অত্যন্ত পাঠক জনপ্রিয়তা লাভ করে। মাত্র পঞ্চান্ন দিনের মাথায় বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ সহ এ পর্যন্ত পনের বছরে বইটির একুশটি সংস্করণ বের হয়েছে। পরবর্তীতে তাওহীদ পাবলিকেশন্স বইটির অনুবাদ বের করে। এ প্রকাশনী থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুল খালেক রাহমানী। বইটির নাম রাহিকূল মাখতূম এর অর্থ হল ছিপি আটা বোতল। লেখক এই জীবনীগ্রন্থের নামকরণ করেছেন পবিত্র কুরআনের সূরা মুতাফ্‌ফিফীনের আয়াত ২৫ থেকে । মূল বইটি প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠা হলেও বাংলা অনুবাদে ৫৩০ পৃষ্ঠা হয়েছে। বইটির ইংরেজি অনুবাদের নাম The Sealed Nectar.
আরো সীরাত গ্রন্থ পড়ুন।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “আররাহীকুল মাখতূম সফিউর রহমান মোবারকপুরী”

Your email address will not be published. Required fields are marked *